চরম অরাজকতা বাংলাদেশে। ৩২, ধানমন্ডি। এটা শুধু একটা ঠিকানা নয়। এই বাড়ির প্রতিটি কোণায় লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাস। স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনেও বিশেষ ভূমিকা ছিল এই বাড়ির। এটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বাড়ি। এই বাড়ি থেকেই মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন মুজিবর রহমান। এই বাড়িতেই পাকিস্তানি বাহিনী খুন করেছিল বঙ্গবন্ধু ও তাঁর প্রায় গোটা পরিবারকে। সেই ইতিহাস আজ মুছে দেওয়া হল। ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হল বঙ্গবন্ধুর বাড়ি। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূসকে বেইমান বলে আক্রমণ করেছেন
বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধুর বাড়ির ইট-পথর-লোহা যারা নিয়ে যাচ্ছে তারা সাধারণে এলাকার নিম্নবিত্তরা। সেগুলি বিক্রি করে বাড়তি কিছু পয়সা উপার্জনের চেষ্টা করছেন নিম্নবিত্ত সাধারণ মানুষের। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর বাড়়ি থেকে লোপাট হচ্ছে প্রচুর বই। সেগুলির কী হবে তা কোনও নিশ্চয়তা নেই।
বুধবার রাতেই ধানমান্ডিতে অশান্ত শুরু হয়। মুজিবরের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখায় প্রচুর মানুষ। বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। বাড়ির একাংশে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তারপর সারা রাত ধরেই বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকালেও তা অব্যহত রয়েছে।
ধানমান্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাড়িটি ৬ তলায়। সেখানে রয়েছে মুজিবরের ব্যবহৃত জিনিসের সংগ্রহশালা বা জাদুধর। সেখানেও ঢুকে পড়ের বিক্ষোভকারীরা। সেই জাদুঘর ভাঙা হচ্ছে। অনেক মূল্যবান আর দুষ্প্রাপ্য বই ছিল। সেগুলি দেদার লুঠপাট করা হচ্ছে। হাতে করে অনেকেই বই নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। মুজিব পরিবারের সদস্যদের লেখা বই ছিল সেই বাড়িতে। সেগুলিও নষ্ট করা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুর কন্যা তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী এই বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানকে। তারা লুঠপাঠ করেছিল, কিন্তু বাড়ি ভাঙেনি, আগুন লাগায়নি। ইউনূস জমানায় সেটাই করা হল। যদিও এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বা তার প্রধান মহম্মদ ইউনূস।