আর্থ–সামাজিক প্রকল্পগুলিতে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য আয় বৃদ্ধির সুলুক সন্ধানের কথা মাথায় রেখেই আজ, বুধবার বিধানসভায় ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জন্য রাজ্য বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে এটা রাজ্য সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। রাজ্যে লগ্নি আকর্ষণের জন্য ‘কন্যাশ্রী’, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’–এর মতো জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলিকে বারে বারেই তুলে ধরছে রাজ্য।
২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, পড়ুয়া ঋণ-কার্ডের পাশাপাশি নতুন রূপে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। ভোট পরবর্তী বাজেটে তার প্রতিফলনও দেখা গিয়েছিল। লোকসভা ভোটের আগেই ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ অস্ত্রে শান দিয়েছিল তৃণমূল। বাড়ানো হয়েছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বরাদ্দ। সাধারণ মহিলাদের ১০০০ টাকা করে ও তফশিলি জাতি-জনজাতিভুক্তদের ১২০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে গোহারা হারার পর ১০০ দিনের কাজের প্রাপ্য ঢাকা মেটায়নি কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য সেই বকেয়া মিটিয়েছ। ১০০ দিনের প্রকল্পের জব কার্ড হোল্ডারদের অন্নসংস্থান করতে কর্মশ্রী প্রকল্প চালু করেছে। ২৬-এর নির্বাচনের আগে বাজেটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাখির চোখ থাকবে সেই গ্রামোন্নয়নেই। এই খাতে ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব থাকতে পারে। গ্রামীণ রাস্তা তৈরিতে জোর দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প-সহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতেও বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা হয়েছে।
সাধারণত ১০ বছর অন্তর বেতন কমিশন গঠন করে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। জিনিসপত্রের দাম, মুদ্রাস্ফীতি অনুযায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়। ২০১৫ সালে নভেম্বরে পশ্চিমবঙ্গে ষষ্ঠ বেতন কমিশন হয়েছিল। ওটাই শেষ। তারপর প্রায় ১০ বছর কাটতে চলল। তাই সরকারি কর্মীরা আশা করতেই পারেন, চলতি বছরেই সপ্তম পে কমিশন গঠনের কথা ঘোষণা করতে পারে রাজ্য সরকার। যদি তা ঘটে, তা হলে রাজ্য বাজেটেই ঘোষণার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। গত বছর রাজ্য বাজেটে অর্থাত্ ২০২৪ সালে ৪ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেছিল সরকার। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৫৩ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পান। অর্থাৎ কেন্দ্র-রাজ্য মহার্ঘ ভাতার তফাত রয়েছে ৩৯ শতাংশ।